Islamic Voice BD (ইসলামী ভয়েস বিডি)

Islamic Voice BD (ইসলামী ভয়েস বিডি)

Breaking

Tuesday, May 15, 2018

কিয়ামতের মাঠে যেসব বান্দা আল্লাহর সাক্ষাৎ পাবেন

May 15, 2018 0
কিয়ামতের মাঠে যেসব বান্দা আল্লাহর সাক্ষাৎ পাবেন

কিয়ামতের মাঠে যেসব বান্দা আল্লাহর সাক্ষাৎ পাবেন


ইসলাম ডেস্ক- যেসব বান্দা কিয়ামতের মাঠে আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করবেন । মহান আল্লাহ তা’য়ালা মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে তাঁর ইবাদত করার জন্যে। এ বিষয়ে তিনি মানুষকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বহু আদেশ, উপদেশ ও জ্ঞান দান করেছেন এবং সেগুলি মেনে চলার কঠোর আদেশ দিয়েছেন। কোন কারণবশতঃ মানুষ ভুল করে ফেললে, তওবার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করে সঠিক পথে ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে। এরপরেও কেউ আল্লাহর আদেশ অমান্য করলে সে শাস্তিযোগ্য অপরাধী হিসাবে গণ্য হবে।
আল্লাহর নিকট প্রত্যাবর্তন বা সমবেত হওয়ার জন্য একটি সময় নির্ধারিত আছে। কোন মানুষ বা ফেরেশতা কূলের কেউ তা জানে না। নির্ধারিত সেই সময়েই কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং মানুষের অজান্তেই হঠাৎ তা এসে যাবে। কিয়ামত দিবসের ভয়াবহতা অবর্ণনীয়। আল্লাহর নিকট মানুষের সমবেত হওয়াও সেদিনের জন্য একটি কঠিন কাজ।
এক প্রত্যাদেশে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর প্রিয় হাবীব (ছাঃ)-কে প্রত্যাদেশ করেন, فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِيْنَ، وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ- ‘অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা বর্ণনা কর এবং সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। আর তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর, যতক্ষণ না মৃত্যু তোমার নিকট উপস্থিত হয়’ (হিজর ১৫/৯৮, ৯৯)।
মহান আল্লাহ আরও বলেন, إِنَّ اللهَ سَمِيْعٌ بَصِيْرٌ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন’ (লোকমান ৩১/২৮; হজ্জ ২২/৭৫)। তাঁর শক্তির বর্ণনায় তিনি বলেন, وَالْأَرْضُ جَمِيْعاً قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّماوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِيْنِهِ ‘কিয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোয় এবং আসমান সমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তাঁর ডান হাতে’ (যুমার ৩৯/৬৭)।
আল্লাহ তা‘আলা হ’লেন সর্বোত্তম সুন্দর সত্তা। উপরের আয়াত কয়টি তাঁর সুন্দরতম আকৃতির নমুনা স্বরূপ পবিত্র কুরআনে লিপিবদ্ধ হয়েছে। তিনি সর্বশক্তির আধার। এসব আল্লাহর ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।
মহিমাময় আল্লাহর পক্ষ হতে আরও একটি মহাসুসংবাদ রয়েছে। তিনি বলেছেন, কিয়ামতে বিচারের দিনে কোন একক (সুনির্দিষ্ট) সময়ে তিনি প্রতিটি বান্দার বা ব্যক্তির সাথে পৃথক বা একাকী সাক্ষাৎ করবেন। তাঁর এই অমূল্য বাণীর অন্তরালে যে অসীম তাৎপর্য লুক্কায়িত আছে, তা একমাত্র তিনিই জানেন। আমরা শুধু তাঁর প্রচারিত ও ঘোষিত উপদেশ ভান্ডার হ’তে প্রাপ্ত জ্ঞানের আলোচনা করব।
আল্লাহ তা‘আলা জানিয়েছেন বিচারের দিনে তিনি প্রতিটি বান্দার সাথে পৃথক পৃথকভাবে বা একাকী সাক্ষাৎ করবেন, তার সাথে কথাবার্তা বলে তার দোষগুণ জানতে চাইবেন। প্রকৃত ঈমানদার বান্দা অতীব ভীত ও বিনীত স্বরে আল্লাহর সম্মুখে সত্য কথা বলবে। এমনকি অনেক দোষ ও পাপের কথাও স্বীকার করবে এবং অনেক অপরাধের পরও জান্নাতে স্থান পাবে। কিন্তু যারা মিথ্যাবাদী তারা মিথ্যা কথা দ্বারা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে চাইবে, এতে অসন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে চরম শাস্তি দেয়ার জন্য জাহান্নামে প্রেরণ করবেন।
মহান আল্লাহ বলেন, وَاتَّقُواْ اللهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّكُم مُّلاَقُوْهُ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِيْنَ ‘আল্লাহকে ভয় কর। জেনে রেখ তোমাদের সবাইকে তাঁর সম্মুখে হাযির হ’তে হবে। আর তুমি বিশ্বাসীদের সুসংবাদ দাও’ (বাক্বারাহ ২/২২৩)। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, إِنْ كُلُّ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آتِي الرَّحْمَنِ عَبْداً، لَقَدْ أَحْصَاهُمْ وَعَدَّهُمْ عَدّاً، وَكُلُّهُمْ آتِيهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَرْداً- ‘নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের নিকটে উপস্থিত হবে না দাস রূপে। তিনি তাদেরকে গণনা করেছেন এবং তাদেরকে ভালভাবে গুনে রেখেছেন। আর কিয়ামত দিবসে তাদের সবাই তাঁর নিকটে আসবে একাকী অবস্থায়’ (মারিয়াম ১৯/৯৩-৯৫)।
এ বিষয়ের প্রতি আরও অধিক দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়াসে সর্বজ্ঞ আল্লাহ বলেন, اللهُ الَّذِيْ رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِيْ لأَجَلٍ مُّسَمًّى يُدَبِّرُ الأَمْرَ يُفَصِّلُ الآيَاتِ لَعَلَّكُم بِلِقَاءِ رَبِّكُمْ تُوقِنُوْنَ ‘আল্লাহ তিনি, যিনি ঊর্ধ্বদেশে স্তম্ভ ছাড়াই আকাশ মন্ডলীকে স্থাপন করেছেন যা তোমরা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমুন্নীত হন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে অনুগামী করেন। প্রতিটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত সন্তরণ করবে। তিনি সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি নিদর্শন সমূহ ব্যাখ্যা করেন যাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসী হ’তে পার’ (রা‘দ ১৩/২)।
তিনি আরো বলেন, الم، أَحَسِبَ النَّاسُ أَنْ يُتْرَكُوْا أَنْ يَقُوْلُوْا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُوْنَ، وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللهُ الَّذِيْنَ صَدَقُوْا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِيْنَ، أَمْ حَسِبَ الَّذِيْنَ يَعْمَلُوْنَ السَّيِّئَاتِ أَن يَسْبِقُوْنَا سَاء مَا يَحْكُمُونَ، مَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء اللهِ فَإِنَّ أَجَلَ اللهِ لَآتٍ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ- ‘মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না? আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নিবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নিবেন মিথ্যুকদেরকে। যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফায়ছালা খুবই মন্দ। যে আল্লাহর সাক্ষাৎ কামনা করে, আল্লাহর সেই নির্ধারিতকাল অবশ্যই আসবে। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’ (আনকাবূত ২৯/১-৫)।

দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়! কি বলছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা

May 15, 2018 0
দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়! কি বলছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা

দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়! কি বলছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা

এ সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে মুসলমানের পবিত্র রমজান মাস। যারা রোজা রাখেন, তারা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছুই মুখে দেননা। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন- স্বেচ্ছা নিয়ন্ত্রণ আর বেশি সময় ধরে প্রার্থনার ভেতর দিয়ে মুসলমানরা এ মাসে নতুন করে আত্মশুদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করেন।
আপাতদৃষ্টিতে রোজা সহজ সরল একটি ধর্মীয় আচরণের বিষয়, কিন্তু এটি নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারণা বিদ্যমান যেগুলো নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার
নীচে রোজা নিয়ে সেরকম ছটি খুব সাধারণ ভুল ধারণা তুলে ধরা হলো। ব্রিটেনে অ্যাডভান্সড (অগ্রসর) ইসলামি বিজ্ঞান এবং শারিয়া আইনের ছাত্র শাব্বির হাসান তার ধর্মীয় জ্ঞান প্রয়োগ করে এগুলোর বিশ্লেষণ করেছেন:
'দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়'
অনেক মানুষ মনে করেন পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়। কিন্তু ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেন, দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভাঙ্গে না।
শাব্বির হাসান বলেন, অনেক মানুষ অতি সাবধানী। তাদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি,- ‘সবচেয়ে ভালো পরামর্শ অল্প পরিমাণ পেস্ট নিন। মিন্টের গন্ধ কম এরকম পেস্ট ব্যবহার করুন।’ ভয় পেলে, গাছের সরু ডাল থেকে তৈরি মিসওয়াক বা দাঁতন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
'মুখের লালা পেটে ঢুকলে রোজা থাকে না'
শাব্বির হাসান বলছেন, মুখের লালা পেটে ঢুকলে কোনো অসুবিধা নাই। মুখের লালা পেটে ঢুকলে রোজা থাকে না- এই বিশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই, নিজের লালা গলাধঃকরণ করা খুব স্বাভাবিক একটি শারীরিক প্রক্রিয়া, এতে অবশ্যই রোজা ভাঙ্গে না। তিনি বলেন, বরঞ্চ ইসলামে রোজার সময় মুখের লালা খাওয়া উৎসাহিত করা হয়েছে।
তবে, তিনি বলেন, অন্যের মুখের লালা নিজের মুখে ঢুকলে রোজা থাকবে না। রোজা পালনের সময় আপনি আপনার সঙ্গীকে চুম খেতে পারবেন না, অন্তরঙ্গ হওয়া যাবেনা। মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে আপনার আকাঙ্ক্ষাকে সংযত করা। সে কারণেই খাবার, পানীয় বা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বন্ধ রাখতে হবে।
'শুধু খাবার অথবা পানি না খেলেই রোজা কবুল হয়ে যাবে'
শুধুমাত্র খাবার মুখে দিলে বা পানি পান করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে তাই নয়। আরো কিছু আচরণে রোজা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হাসান বলছেন, কিছু অপরাধ জিহ্বা দিয়ে হয়...আপনি যদি দুর্নাম রটান, গুজবে অংশ নেন বা কাউকে গালিগালাজ করেন, তাহলে রোজা কবুল নাও হতে পারে।
'অসাবধানতা-বশত কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায়'
আপনি যদি সত্যিই একদম ভুলে কিছু খেয়ে ফেলেন, তাহলেও আপনার রোজা বৈধ থাকবে, যদিনা আপনি বোঝার সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু নামাজের আগে ওজুর সময় যদি আপনি অনিচ্ছাকৃত-ভাবে পানি খেয়ে ফেলেন তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ এই ভুল এড়ানো সম্ভব।
হাসান বলেন, ‘এ কারণে রোজা রেখে অজু করার সময় গারগল না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনি শুধু কুলি করে পানি ফেলে দিন।’
‘ওষুধ খাওয়া যাবে না’
মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) আন্তর্জাতিক গ্লুকোমা সমিতির সাথে যৌথ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে- রোজা রেখেও কিছু ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। যেমন, চোখের ড্রপ। এমসিবি বলেছে, চোখের ড্রপ, কানের ড্রপ বা ইনজেকশনে রোজা ভাঙবে না।তবে যেসব ওষুধ মুখে দিয়ে খেতে হয়, সেগুলো নিষিদ্ধ । সেহেরির আগে এবং ইফতারির পর তা খেতে হবে।
হাসান বলেন, প্রথম কথা আপনি যদি অসুস্থ থাকেন, তাহলে ভাবেতে হবে আপনি রোজা আদৌ রাখবেন কিনা? কোরানে পরিস্কার বলা আছে, আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলুন।
‘যে কোনো পরিস্থিতিতেই রোজা রাখতে হবে’
ইসলামে শুধু প্রাপ্তবয়স্ক (সাধারণত ১৫ বছর) এবং সুস্থ ব্যক্তির রোজা ফরজ বা আবশ্যিক করা হয়েছে। এমসিবি বলছে - শিশু, অসুস্থ (শারীরিক এবং মানসিক), দুর্বল, ভ্রমণকারী, অন্তঃসত্ত্বা বা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন নারীর জন্য রোজা আবশ্যিক নয়।
হাসান বলেন, যদি স্বল্প সময়ের জন্য কেউ অসুস্থ হন, তাহলে সুস্থ হওয়ার পর অন্য সময়ে তিনি ভাঙ্গা রোজাগুলো পূরণ করে দিতে পারেন, যদি দীর্ঘস্থায়ী কোনো অসুস্থতা থাকে এবং রোজা রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে রোজার মাসের প্রতিদিন ফিদা অর্থাৎ গরীবকে কিছু দান করুন। ব্রিটেনে এই ফিদার পরিমাণ নির্ধারিত করা হয়েছে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ পাউন্ড।

সহজে আমলযোগ্য ১৫ টি জরুরী ছোট ছোট দোয়া

May 15, 2018 0
সহজে আমলযোগ্য ১৫ টি জরুরী ছোট ছোট দোয়া

সহজে আমলযোগ্য ১৫ টি জরুরী ছোট ছোট দোয়া


দোয়া শব্দটির আক্ষরিক অর্থ 'আবাহন' বা 'ডাকা', যা একটি পদ্ধতি-সিদ্ধ মিনতি প্রক্রিয়া। ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ বলেছেন: "দোয়া উপাসনার সারাংশ"; আর আল্লাহ তার প্রেরিত ধর্মগ্রন্থ কোরআন-এ বলেছেন: এবং তোমার প্রতিপালক বলেন: "আমায় ডাকো; আমি উত্তর দেবো (তোমাদের প্রার্থণার)" । দুনিয়ার বুকে মানুষের উপকার হয় ও বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়- এমন অনেক দোয়া পবিত্র কোরআনে কারিম ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। দোয়াগুলো খুবই ছোট তাই সহজে মুখস্থ করা যায়। সহজে আমলযোগ্য কয়েকটি ছোট ছোট দোয়া পাঠকদের জন্য পেশ করা হল:
১৫ টি জরুরী দোয়া ও আয়াত সমূহের বিবরণ
০১. আউজু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম।
[অর্থঃ বিতারিত শয়তানের হাত থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।] .
০২. বিস্মিল্লাহির রহমানির রাহিম।
[অর্থঃ পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি।] .
০৩. রাব্বানা আ’তিনা ফিদ্দুনিয়া হাছানাতাঁও ওয়াফিল আখিরাতি হাছানাতাঁও ওয়াক্বিনা আজাবান্নার।
[অর্থঃ হে আল্লাহ্ তুমি আমাকে ইহকালীন যাবতীয় সুখ-শান্তি ও পরকালীন যাবতীয় সুখ-শান্তি প্রদান কর। আর দোজখের আগুন থেকে আমাকে রক্ষা কর।]
০৪. মাতা-পিতার জন্য সন্তানের দোয়াঃ রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ঈয়ানী সাগিরা। (সূরা বণী ইসরাইল, আয়াতঃ ২৩-২৫)
[অর্থঃ হে আল্লাহ্ আমার মাতা-পিতার প্রতি আপনি সেই ভাবে সদয় হউন, তাঁরা শৈশবে আমাকে যেমন স্নেহ-মমতা দিয়ে লালন-পালন করেছেন।]
doa০৫. ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করার দোয়াঃ রাব্বানা লা’তুযিগ কুলুবানা বা’দা ইয হাদাইতানা ওয়া হাবলানা মিল্লাদুনকা রাহমাতান, ইন্নাকা আনতাল ওয়াহাব। (সুরা আল ইমরান, আয়াতঃ ০৮)
[অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, সরলপথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে বক্র করে দিওনা এবং তুমি আমাদের প্রতি করুনা কর, তুমিই মহান দাতা।]
০৬. ভুল করে ফেললে ক্ষমা চাওয়ার দোয়াঃ রাব্বাবা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফির্লানা ওয়াতার হামনা লানা কুনান্না মিনাল খা’সিরিন।
[অর্থঃ হে আল্লাহ্, আমি আমার নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। এখন তুমি যদি ক্ষমা ও রহম না কর, তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যাব।]
০৭. গুনাহ্ মাফের দোয়াঃ রাব্বানা ফাগফিরলানা যুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সাইয়্যিআতিনা ওয়া তাওয়াফ্ফানা মায়াল আবরার। (সূরা আল ইমরান, আয়াতঃ ১৯৩)
[অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের গুনাহসমূহ মাফ করে দাও, আমাদের থেকে সকল মন্দ দূর করে দাও এবং আমাদের নেক লোকদের সাহচার্য দান কর।]
০৮. স্বামী-স্ত্রী-সন্তানদের জন্য দোয়াঃ রাব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াজিনা ওয়া যুররিইয়াতিনা কুররাতা আইইনিও ওয়াজ আলনা লিল মুত্তাক্বিনা ইমামা। (সূরা আল ফুরকান, আয়াতঃ ৭৪)
[অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদিগকে আমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিগণ হতে নয়নের তৃপ্তি দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানাও।]
০৯. ঈমান ঠিক রাখার আমলঃ ইয়া মুক্বাল্লিবাল কুলুবি ছাব্বিত ক্বালবি আলা দ্বীনিকা।
[অর্থঃ হে মনের গতি পরিবর্তনকারী, আমার মনকে সত্য দ্বীনের উপর স্থিত কর।]
১০. সন্তানদের প্রতি মাতা-পিতার দোয়া ও মাতা-পিতার জন্য সন্তানদের দোয়াঃ রাব্বিজ আলনী মুতিমাছ ছালাতি ওয়ামিন জুররি ইয়াতি, রাব্বানা ওয়াতাকাব্বাল দুয়া, রাব্বানাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালি দাইয়া ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওয়া ইয়াকুমুল হিসাব। (সূরা ইব্রাহিম, আয়াতঃ ৪০-৪১)
[অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে নামাজ কায়েমকারী বানাও আর আমার সন্তানদের মধ্য থেকেও। হে আল্লাহ্ আমার দোয়া কবুল করে নাও। হে আল্লাহ্ আমাকে ও আমার মাতা- পিতাকে আর সকল ঈমানদার লোকদের সেদিন ক্ষমা করে দিও, যেদিন হিসাব কার্যকর হবে।]
১১. নেক সন্তানদের জন্য দোয়াঃ রাব্বি হাবলি মিনাস সালেহীন।
[অর্থঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে নেককার সৎ-কর্মশীল সন্তান দান কর।]
১২. অবাধ্য সন্তান বাধ্য করার দোয়াঃ ওয়াছলিহলি ফী যুররিইয়াতি, ইন্নি তুবতু ইলাইকা, ওয়া ইন্নি মিনাল মুসলিমীন। (সূরা আহকাফ, আয়াতঃ ১৫)
[অর্থঃ আমার জন্য আমার সন্তানদের মধ্যে প্রীতি দান কর, অবশ্যই আমি তোমারই দিকে ফিরিতেছি এবং অবশ্যই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভূক্ত।]
১৩. সকল মুসলমানদের জন্য দোয়াঃ আল্লাহুম্মাগ ফিরলী ওয়ালিল মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাতি, ওয়াল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাতি।
[অর্থঃ হে আল্লাহ্ তুমি আমার ও সমস্ত মু’মিন নর-নারীর এবং সমস্ত মুসলমান পুরুষ ও স্ত্রীলোকের পাপ সমূহ মোচন করে দাও।]
১৪. কাফেরদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার দোয়াঃ রাব্বানাগ ফিরলানা যুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফী আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্কদামানা ওয়ানছুরনা আলাল কাওমিল ক্বাফিরীন। (সূরা আল ইমরান, আয়াতঃ ১৪৭)
[অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের গুনাহ এবং কোন কাজের সীমা লঙ্ঘনকে তুমি ক্ষমা কর, আমাদের ঈমান দৃঢ় রাখ এবং কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয়ী কর।]
১৫. ক্ষমা ও রহমতের দোয়াঃ রাব্বিগ ফির ওয়ারহাম ওয়া আনতা খাইরুর রাহিমীন।
[অর্থঃ হে আল্লাহ্, আমাকে ক্ষমা করে দাও, আর আমার প্রতি রহম কর, তুমিই তো উত্তম দয়ালু।]

Friday, March 30, 2018

মুহাম্মদ (সাঃ এর ১৪০০ বছর আগে বাণী আজ বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছে

March 30, 2018 0
মুহাম্মদ (সাঃ এর ১৪০০ বছর আগে বাণী আজ বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছে
Image may contain: night and text
মুহাম্মদ (সাঃ এর ১৪০০ বছর আগে বাণী আজ বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছে
মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “পুরুষের প্যান্ট বা কাপড় পায়ের টাখনুর উপর পড়তে হবে। অন্যথায় তারা জাহান্নামে যাবে।”
– (সহীহ বুখারী ৫৩৭১)
বিজ্ঞান বলে, পুরুষের টাখনুর ভিতর প্রচুর পরিমানে হরমোন থাকে এবং তার আলো বাতাসের প্রয়োজন হয়। তাই কেউ যদি তা খোলা না রেখে ঢেকে রাখে, তাহলে তার যৌনশক্তি কমে যাবে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে।
মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “ভ্রু প্লাগকারীর উপর আল্লাহর লানত”
– (সহীহ বুখারী ৫৫১৫)
বিজ্ঞান বলে, ভ্রু হলো চোখের সুরক্ষার জন্য। ভ্রুতে এমন কিছু লোম থাকে যদি তা কাটা পড়ে যায় তাহলে ভ্রুপ্লাগকারী পাগল হতে পারে, অথবা মৃত্যুবরণও করতে পারে।
রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়া হারাম”
– (সহীহ বুখারী ৬১২৪)
বিজ্ঞান বলে, ধুমপানের কারনে ফুস্ফুসের ক্যান্সার, ব্রংকাইটিস ও হৃদরোগ হয়ে মানুষ মারা যায়। ধুম্পান করলে ঠোট, দাতের মাড়ি, আঙ্গুল কালো হয়ে যায়। যৌনশক্তি ও ক্ষুধা কমে যায় এমনকি স্মৃতিশক্তি ও কমে যায়।
রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার হারাম।”
– (মুসলিম ১৬৫৫)
বিজ্ঞান বলে, স্বর্ণ এমন একটি পদার্থ যা স্কিনের সাথে মিশে ব্লাডের মাধ্যমে ব্রেনে চলে যায়। আর তার পরিমান যদি ২.৩ হয় তাহলে মানুষ তার আগের স্মৃতি সব হারিয়ে ফেলবে।
রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ঘুমানোর সময় আলো নিভিয়ে এবং ডান কাত হয়ে ঘুমাতে।
– (সহীহ বুখারী ৩২৮০)
বিজ্ঞান বলে, ডান কাত হয়ে ঘুমালে হার্ট ভালো করে পাম্প করে। আর লাইট না নিভিয়ে ঘুমালে ব্রেনের এনাটমি রস শরীরে প্রবেশ করতে পারে না, যার ফলে ক্যান্সার হওয়ার খুব সম্ভবনা থাকে।
রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা গোফ ছেটে ফেল এবং দাড়ি রাখ।”
– (সহীহ মুসলিম ৪৯৩ ও ৪৯৪)
বিজ্ঞান বলে, দাড়ি না রাখলে স্ক্রিন ক্যান্সার, ফুস্ফুসের ইনফেকশন এবং ৪০ এর আগে যৌবন হারানোর সম্ভবনা থাকে।
আল্লাহ সুবনাহু তায়ালা বলেন, “আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়োনা। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং ধ্বংসের পথ।”
– (বনি ইসরাঈল ৩২) নেশাগ্রস্থ শয়তানের কাজ (মাইদাহ ৯০)
বিজ্ঞান বলে, পর্নোগ্রাফি ও অশ্লীল সম্পর্ক সহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নেশায় যদি কেউ জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তার ব্রেনের ফরেন্টাল এরিয়া পরিচালনা করার ইনটেলেকচুয়াল সেলগুলো থরথর করে কাপতে থাকে এবং অস্থির হয়ে যায়। যার ফলে সে নেশাগ্রস্থ হয়ে মাতাল ও অসুস্থের মত জীবন পরিচালনা করে। এবং তা তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।
আল্লাহ বলেন, “আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়।”
– (আরাফ ২০৪)
বিজ্ঞান বলে, কুরআনের সাউন্ড ওয়েব শরীরের সেলগুলোকে সক্রিয় করে, অসুস্থতা আরোগ্য করে বিশেষ করে হার্ট এবং ক্যান্সার রোগীদের। আর ব্রেনকে এমনভাবে চার্জ করে, ঠিক যেমন ভাবে ফিউজ হওয়া ব্যাটারীকে সচল করা হয়।

মহানবী (সা.)-এর হুঁসিয়ারি, যে দশটি কাজ করলে বিপদ অবধারিত!

March 30, 2018 0
মহানবী (সা.)-এর হুঁসিয়ারি, যে দশটি কাজ করলে বিপদ অবধারিত!
Image may contain: night and text
মহানবী (সা.)-এর হুঁসিয়ারি, যে দশটি কাজ করলে বিপদ অবধারিত!এ সম্পর্কিত একটি হাদিস এখানে উল্লেখ করা হলো। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ-
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যখন আমার উম্মত ১০টা কাজ করবে, তখন তাদের উপর বিপদ নেমে আসবে। রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলোঃ হে রাসূল, কি সেই দশটি কাজ? যা করলে বিপদ হবে? তিনি বললেনঃ
১। যখন রাস্ট্রীয় সম্পদকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করা হবে।
২। যখন আমানত হিসেবে রক্ষিত সম্পদকে লুটের মাল হিসাবে গ্রহণ করা হবে (অর্থাৎ আত্মসাৎ করা হবে)।
৩। যাকাতকে জরিমানার মত মনে করা হবে।
৪। স্বামী যখন স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং মায়ের অবাধ্য হবে।
৫। বন্ধুর প্রতি সদাচারী ও পিতার সাথে দুর্ব্যবহারকারী হবে।
৬। মসজিদে হৈ চৈ হবে।
৭। জনগণের নেতা হবে সেই ব্যক্তি যে তাদের মধ্যেকার সবচেয়ে নিকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী।
৮। মানুষকে তার ক্ষতির আশংকায় সম্মান করা হবে।
৯। গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের হিড়িক পড়ে যাবে।
১০। উম্মতের পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদেরকে অভিশাপ দেবে। তখন আগুনের বাতাস আসবে, মাটির ধস ও দেহের বিকৃতি ঘটবে।”
সহীহ তিরমিযী; আততারগীব ওয়াত তারহীবঃ ৩য় খন্ডঃ ১৫৪১

Thursday, March 29, 2018

জুমার নামাজ কোনো কারনে ছুটে গেলে কী করবেন? জেনে নিন

March 29, 2018 0
জুমার নামাজ কোনো  কারনে ছুটে গেলে কী করবেন? জেনে নিন


সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। আর শুক্রবারের শ্রেষ্ঠ নামাজ হলো জুমা। জুমার নামাজের বিভিন্ন ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, জুমা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে ওজু করা করে জুমা নামাজ পড়তে আসবে তার পূর্ববর্তী জুমা থেকে বর্তমান জুমা পর্যন্ত সংগঠিত গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়।
পবিত্র কুরআনে সূরা আল জুমায় ইরশাদ করা হয়েছে, যখন সালাতের জন্য জুমার দিবসের আহবান জানানো হয়, তখনই আল্লাহকে স্মরণের উদ্দেশে চলে এসো এবং ব্যবসায়িক লেনদেন বন্ধ করে দাও। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে।
জুমার দিনের বৈশিষ্ট্য
ইসলামি শরিয়তের বিধানে জুমার দিনের মাহাত্ম্য সীমাহীন। এই দিন মানব জাতির আদি পিতা হজরত আদম আ. এর দেহের বিভিন্ন অংশ সংযোজিত বা জমা করা হয়েছিল বলেই দিনটির নাম জুমা রাখা হয়েছে। জুমার দিনকে আল্লাহপাক সীমাহীন বরকত দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন। এটি সপ্তাহের সেরা দিন। হাদিস শরিফের বর্ণনা অনুযায়ী এই বরকতময় দিনটি আল্লাহপাক বিশেষভাবে উম্মতে মুহাম্মদিকে সা. দান করেছেন।
নবী করিম সা. ইরশাদ করেন, সর্বাপেক্ষা উত্তম ও বরকতময় দিন হচ্ছে জুমার দিন। এই পবিত্র দিনে হজরত আদম আ. কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। (মুসলিম শরিফ)
জুমার নামাজের ফজিলত
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘জুমার দিনে মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা দাঁড়িয়ে যান; পর্যায়ক্রমে লেখতে থাকেন প্রথমে আগমনকারীদের ফজিলত। সর্বপ্রথম আগমনকারী একটি উট কুরবানি করার সওয়াব লাভ করেন, পরের জন গরু, তারপরের জন দুম্বা, তারপরের জন মুরগি এবং তারপরের জন ডিম কুরবানি দেয়ার সওয়াব লাভ করেন। অতপর ইমাম যখন মিম্বারে আসেন, তখন তারা খাতা গুটিয়ে রেখে মনযোগ দিয়ে খুৎবা শুনেন। (বুখারি : ৮৭৬, মিশকাত : ১৩৮৪)
জুমার নামাজ না পড়লে
জুমার নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ নামাজ ছেড়ে দিলে হাদিসে ভয়াবহ ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমার নামাজ গুরুত্বসহ পড়া উচিত।
জুমার নামাজ প্রত্যেক বালেগ পুরুষের জন্যই ওয়াজিব। হাদিসে এসেছে, হযরত হাফসা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, প্রত্যেক (প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ) মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব- অপরিহার্য কর্তব্য। (সুনানে নাসায়ী)
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, যে ব্যক্তি অবহেলা অলসতা করে পর পর তিন জুমা নামাজ ছেড়ে দিল, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। (আবু দাউদ)
আরেক হাদিসে রসূলুল্লাহ সা. বলেন, যে ব্যক্তি কোনো ওজর এবং অনিষ্টের ভয় ছাড়া জুমার নামাজে অংশ গ্রহণ করে না, মুনাফিকের এমন দফতরে তার নাম লিপিবদ্ধ করা হয়, যা কখনো মোছা বা রদবদল করা হয় না।
জুমার এক রাকাত ছুটে গেলে
কারো জুমআর এক রাকআত ছুটে গেলে বাকি আর এক রাকআত ইমামের সালাম ফেরানোর পর উঠে পড়ে নিলে তার জুমুআহ হয়ে যাবে। অনুরুপ কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকূর আগে থেকে পেলেও ওই রাকআত এবং তার সাথে আর এক রাকআত পড়লে তারও জুমুআহ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকূ শেষ হওয়অর পর জামাআতে শামিল হয়, তাহলে সে জুমআর নামাজ পাবে না। এই অবস্থায় তাকে যোহরের ৪ রাকআত আদায়ের নিয়তে জামাআতে শামিল হয়ে ইমামের সালাম ফিরার পর ৪ রাকআত ফরজ পড়তে হবে। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, সৌদি উলামা-কমিটি ১/৪১৮, ৪২১)
আর কেউ যদি জুমার নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমা শেষ হয়ে গেছে তবে তাকে জোহর নামাজ পড়তে হবে। কারণ জামাআত ছাড়া জুমার নামাজ হয় না।
হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসঊদ রা. বলেন, যে ব্যক্তি জুমার এক রাকআত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকআত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকূ না পায়, সে যেন জোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।’ (ইবনে আবী শাইবা, ত্বাবারানী, বায়হাকী, আলবানী : ৬২১)
কোন ইমাম সাহেব যদি বিনা ওজুতে জুমুার নামাজ পড়িয়ে নামাজের শেষে মনে হয়, তাহলে মুক্তাদির নামাজ সহিহ হয়ে যাবে। আর ইমাম ওই নামাজ কাজা করতে ৪ রাকআত জোহর পড়বেন। (আল-মুন্তাকা মিন ফাতাওয়াল ফাওয়া : ৩/৬৮)
খুতবা না শুনলে
জুমার খুতবা অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। জুমার খুতবা হলো ওয়াজিব। খুতবা চলাকালীন সময় কোন প্রকার কথা বলা যাবে না। এমনকি কাউকে কথা বলতে দেখে ‘চুপ কর’ এ কথাও বলা যাবে না। কারণ, হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধ এসেছে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইমামের খুতবা দেয়া অবস্থায় তুমি যদি তোমার সাথীকে বল, তুমি চুপ কর, তাহলে তুমি অনর্থক কথা বললে’।
ইমাম আহমদ তার বর্ণনায় হাদিসে আরও বর্ধিত করেন, অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোন অনর্থক কর্ম করল, তার জন্য ওই জুমায় আর কিছু রইল না।
অনেকে খুতবার সময় নামাজ পড়েন। এটাও হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ যে নামাজ পড়া হচ্ছে সেটি সুন্নত। আর খুতবা শোনা হলো ওয়াজিব। সুতরাং খুতবা শুরু হয়ে গেলে সেটাই শুনতে হবে। সে ক্ষেত্রে সুন্নতগুলো পড়ে পড়তে হবে।

Post Copied Form- http://aaj-kal.com/archives/22135